গোলাপজাম
গোলাপজামের তরে মন বয় লোভের ঝড়ে
গোলাপজামই শুধু ভাবেন,
কারোর কথা নাহি শোনে ভাবেন তিনি কতক্ষণে
একটা গোলাপজাম খাবেন।
সময় পেলেই টুক্ করে হাতে কয় টাকা ধরে
ছুটে যান মিষ্টির দোকান,
দোকানের ভেতর গিয়ে দশ-বারো খান্ নিয়ে
পরপর নিজের মুখে ঢোকান।
এমনই হলেন গোপালবাবু গোলাপজামে তিনি বেকাবু
আর কিছু লাগেনা সেটা পেলে,
খেতে সেই মিষ্টি ক্ষুধার হয় সৃষ্টি
কি তৃপ্তি পান গোলাপজাম খেলে।
তেমনই একটা সকালে— দোকান যান তিনি অকালে,
খেতে কয়েকটা গোলাপজাম,
ভেতরে এক চেয়ার ধরে দোকানদারে সে জিজ্ঞাস করে,
"একটা গোলাপজামের কত দাম?"
"একটার দাম ছ'টাকা", উত্তর দিলেন হরিকাকা,
"কয়খানি আপনারে দেব?"
"একটি দাও আগে আমারে" শুধালেন হর্ষ সহকারে।
খেয়ে বলেন, "আরেকটি নেব।"
দোকানদার আরেকটি পিস দেন, সেটাও মুহূর্তে খেয়ে নেন,
আবার বলেন আরেকপিস দিতে,
এইভাবে পরিমাণ হয় পাঁচটা— বাড়ে যেন তার চর্বির খাঁচটা,
তখনও দ্বিধাহীন আরও নিতে।
সংখ্যা বাড়ে ক্রমাগত, খাচ্ছেন যত চাইছেন তত,
প্রত্যেকটা খেয়ে নিচ্ছেন নিমেষে।
দেখে অবাক হয়ে লোকে বলে, "এ মোটা এত মিষ্টি যে খেয়ে চলে,
চেয়ার ছেড়ে নড়তে পারবে তো শেষে?"
পরিমাণ দাঁড়ায় তিরিশে যখন, দোকানি তার কাছে আসে তখন,
"আর গোলাপজাম নেই", তিনি জানান,
গোপালবাবু বলেন, "শেষ?, আচ্ছা ঠিক আছে বেশ,
আবার নতুন করে বানান।"
উত্তরে দোকানি কয়, "এখনই তা সম্ভব নয়,
কী করে হয় আপনিই বলুন?"
গোপালবাবু শুধান, "এবার, কী করা যাবে আর?
টাকাটা দিয়ে দিই চলুন।.....
আপনি বলুন মোরে এবার, কত আপনারে দেবার,"
"একশো আশি", দোকানি বলেন।
"এত টাকা কেন হবে? এত কিছু খেলাম কবে?
এইভাবে আপনি মানুষ ছলেন !!"
"তিরিশখানা যে খেলেন, সেটা কি ভুলে গেলেন?"
দোকানি রেগে বলেন জোরে।
বোঝেন তিনি নিজের ভুল— যেটি এই ঝামেলার মূল,
গোপালবাবু ক্ষমা চান করজোড়ে।
দোকানি কন, "দশ টাকা ছাড়ে, বাকি টাকা দিন আমারে।"
গোপালবাবু বের করেন মানিব্যাগ।
যথা মূল্য দোকানদারকে দিলেন, ফেরত টাকাটা হাতে নিলেন,
মানিব্যাগে তা ভরে করলেন দোকান ত্যাগ।