গোবিন্দ মোদক
গোবিন্দ মোদক
প্রত্যয়
একদিন বিশ্বাস করতাম —
অন্ধকারে দাঁড়িয়ে
জ্যোৎস্নার নাম ধরে ডাকলে
মিহি হয়ে যাবে অন্ধকার।
বিশ্বাস করতাম —
সাপের শঙ্খলাগাকালীন সময়ে
নতুন গামছা পেতে দিলে
সে গামছায় সব বিপদ কেটে যায়।
বিশ্বাস করতাম —
বুকে বেলকাঁটা ফুটিয়ে
মায়ের মন্দিরে রক্ত দিলে
মা প্রসন্না হয়ে মুখ তুলে তাকান।
বিশ্বাস করতাম —
নিরন্নকে অন্ন দিলে, তৃষ্ণার্তকে জল দিলে
চিত্রগুপ্তের খাতায় সে দান তোলা থাকে॥
বিশ্বাস করতাম —
বৌদিরা দেওরের কাছে মাতৃসমা।
কিন্তু মেজবৌদি যেদিন নিজের হাতে
নিজেরই ব্লাউজ ছিঁড়ে ফেলে
আমার দিকে আঙুল তুলে বলেছিল …
কি বলেছিল আমি শুনতে পাইনি,
কেন না বিশ্বাস-ভাঙার প্রলয়ঙ্করী শব্দে
আমি কিছুক্ষণের জন্য
বধির হয়ে গিয়েছিলাম।
আর চরম একটা রাসায়নিক বিক্রিয়ায়
আমার মগজের ভিতরটাতে
আমূল পরিবর্তন ঘটেছিল।
আমি আজ আর তাই অবিশ্বাস করি না যে—
একজন বাবা তার নিজের মেয়েকে দিয়ে
জোর করে কামচরিতার্থ করে।
অবিশ্বাস করি না যে —
কোনও মা তার নিজের সোমত্থ ছেলের সাথে …
অবিশ্বাস করি না যে —
পাথরের শিবলিঙ্গ দুধ খায়!
আমি অবিশ্বাস করি না যে
অসম্ভব বলে কিছু হতে পারে।
আসলে আমি বিশ্বাসকেই হারিয়েছি।
শুধু যখন দিনান্তের সূর্য অস্ত যায়
তখন আমার মনে শেষ প্রত্যয় জাগে —
পরদিন একটা সকাল আসবে! আসবেই!!
আর সেই প্রত্যয়ে আমি আবার
নতুন করে বেঁচে উঠি প্রতিদিনের জন্য॥